পরিবহন[সম্পাদনা]





অবকাঠামো | সংখ্যা | নাম | পরিষেবা |
---|---|---|---|
প্রধান রেলওয়ে স্টেশন | ২ | কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন | রেল |
বাসস্ট্যান্ড | ৪ | সায়েদাবাদ গাবতলী মহাখালী ফুলবাড়িয়া | সড়কপথ |
লঞ্চ স্ট্যান্ড | ১ | সদরঘাট | নৌপথ |
বিমানবন্দর | ২ | হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তেজগাঁও বিমানবন্দর | আকাশপথ |
ফ্লাইওভার | ১২ |
| সড়কপথ |
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে | ১ | ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে | সড়কপথ |
মেট্রোরেল | ১ | ঢাকা মেট্রোরেল এমআরটি লাইন ৬ | মেট্রো রেল |
ঢাকা বিশ্বের মধ্যে রিকশার রাজধানী নামে পরিচিত।[৬০][৬১][৬২] প্রতিদিন গড়ে এখানে প্রায় ৪,০০,০০০ রিকশা চলাচল করে।[৬৩]
রিকশা এবং ইঞ্জিন চালিত অটো রিকশা ঢাকার অন্যতম প্রধান বাহন, আর এই শহরে যে প্রায় ৪০০০০০০ এর বেশি রিকশা চলাচল করে, তা অন্য সকল দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ[৬৪][৬৫] যদিও সরকারি হিসাব মতে ঢাকা শহরের জন্য মোট ৮৫,০০০ রিকশার নিবন্ধন দেয়া হয়েছে।[৪৮][৬৬] রিকশা ঢাকা শহরের রাস্তার যানজটের অন্যতম কারণ এবং কিছু বড় বড় রাস্তায় রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন পরিচালিত বাস ঢাকা শহরের পরিবহনের আরেকটি জনপ্রিয় উপায়। এছাড়া রয়েছে বহু বেসরকারি বাস সার্ভিস। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে ঢাকা শহরে পেট্রোল ও ডিজেলচালিত কিছু যানবাহন (বেবি ট্যাক্সি, টেম্পো ইত্যাদি) বন্ধ করে দেওয়া হয় ও পরিবর্তে প্রাকৃতিক গ্যাস (Compressed Natural Gas – CNG) বা সিএনজিচালিত সবুজ অটোরিক্সা চালু হয়। এর ফলে পরিবেশ দূষণ অনেক কমে এসেছে।
স্কুটার, ট্যাক্সি এবং ব্যক্তিগত মালিকানাধীন যানবাহনগুলো শহরের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সরকার দুই স্ট্রোক ইঞ্জিন বিশিষ্ট অটো রিকশার প্রতিস্থাপন করে "সবুজ অটোরিকশা" চালু করেছে যা সিএনজি অটোরিকশার বা বেবি-ট্যাক্সি নামে পরিচিত এগুলোতে পরিবেশ বান্ধব সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়।[৬৭] ঢাকা রাস্তা চলাচলকারী ট্যাক্সিগুলো দুই ধরনের হয়। হলুদ ট্যাক্সিগুলো কিছুটা উচ্চ মান সম্পন্ন হয়ে থাকে যদিও এটি ব্যয়বহুল। এই ট্যাক্সিগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত; টয়োটা করোলা এর, টয়োটা প্রিমিও এর এবং টয়োটা এলিয়ন মডেলের গাড়িগুলো ট্যক্সি হিসাবে ব্যবহার করা হয় এখানে। ২০১৩ সালে এই সেবাটি প্রথমে ২০০-২৫০০ টি ট্যক্সি নিয়ে শুরু করা হয়েছিলো।[৬৮] সরকার ১,৫০০সিসি ক্ষমতা বিশিষ্ট ইঞ্জিনের আরও ৫,০০০ নতুন ট্যাক্সি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই ধরনের ট্যাক্সির সংখ্যা ১৮,০০০ পর্যন্ত বাড়ানো হবে।[৬৮]
১৯৮৬-এর হিসাব অনুযায়ী, ঢাকার ১,৮৬৮ কিলোমিটার (১,১৬১ মা) রাস্তাগুলো বাঁধানো ছিলো।[৬৯] সড়কপথ, রেলপথের মাধ্যমে ঢাকা শহর দেশের অন্যন্য অংশের সাথে সংযুক্ত আছে। ঢাকা থেকে ভারতের কলকাতা ও আগরতলা শহরে যাতায়াতের জন্য বিআরটিসি পরিচালিত নিয়মিত বাস সার্ভিস রয়েছে।[৭০]
ঢাকার রেলওয়ে স্টেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে, বনানী রেলওয়ে স্টেশনে, তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন, ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে এবং গেন্ডারিয়া রেলওয়ে স্টেশন, রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ রেলওয়ে শহরতলি এবং জাতীয় রুটে সেবা প্রদান করে থাকে।[৭১] বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে একটি নিয়মিত আন্তর্জাতিক ট্রেন সার্ভিস পরিচালনা করে থাকে। ঢাকা থেকে অন্যান্য শহরতলি এলাকায় রেল যোগাযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে ডেমু (DEMU) ট্রেনের মাধ্যমে নিয়মিত রেলসেবা পরিচালনা করে আসছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।[৭২]
বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে সদরঘাট নৌবন্দরের মাধ্যমে নদীর অপর পারে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বিভিন্ন স্থানে যাত্রী এবং মালপত্র পরিবহন করা হয়।[৭৩]
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা শহরের কেন্দ্রে থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত, এটি দেশের বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম বিমানবন্দর।[৭৪] দেশের মোট বিমান আগমন এবং প্রস্থানের ৫২% পরিচালনা করা হয় এখানে। চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, কক্সবাজার, যশোর, বরিশাল, সৈয়দপুরে অভ্যন্তরীণ সেবা এবং এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম ইউরোপের প্রধান শহরগুলোতে আন্তর্জাতিক সেবাপরিচালনা করা হয়।[৭৫][৭৬]
নাগরিক পরিষেবা[সম্পাদনা]
ঢাকায় নাগরিক পরিষেবা প্রদানের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে। ঢাকা শহরের পানি চাহিদা পূরণের জন্য ঢাকা ওয়াসা, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বা বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য ডেসা এবং ডেসকো, গ্যাস সরবারহ করার জন্য তিতাস গ্যাস প্রভৃতি সেবামূলক সংস্থা নিয়োজিত রয়েছে।
জনগোষ্ঠী[সম্পাদনা]

ঢাকা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শহর যা বাঙালি সংস্কৃতির একটি ছবিও বলা চলে। ঢাকায় বসবাসকারীদের কিছু অংশের পূর্বপুরুষরা ভারতীয়। তারা অনেকেই ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশ বিভাগের সময় ভারত থেকে এসেছিলেন। এদের মধ্যে কিছু বিহারী মুসলমানও ছিলেন। এদের সংখ্যা বর্তমানে কয়েক লক্ষ। এখানকার বেশিরভাগ লোক মুসলমান সম্প্রদায়ের, এদের সংখ্যা শতকরা ৮৫%। কিন্তু সাথে বহু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাস এই শহরে যারা জনসংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শতকরা ১০%। এছাড়াও খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং শিখ ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করেন। ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর মাঝে হরিজন, ঋষি ও বাহাই সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করে। ঢাকায় বসবাসকারী প্রায় সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলেন, পুরান ঢাকা'র লোকেরা উর্দুতেও কথা বলে থাকেন। বর্তমানে নতুন প্রজন্মের অনেকেই ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করে। ঢাকা নগরী অনেকগুলো ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল আছে যারা ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে। কিছু ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীরা হিন্দি, তামিল, তেলুগু ও ভোজপুরী ভাষাও ব্যবহার করে।
পুরান ঢাকার স্থানীয় আদি অধিবাসীদের 'ঢাকাইয়া' বলা হয়। তাদের আলাদা উপভাষা এবং সংস্কৃতি রয়েছে। ঢাকা রাজধানী হওয়ায় সারা বাংলাদেশ থেকেই এখানে লোকজন উন্নত জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে আসে।
0 Comments